ডিটেকটিভ বিনোদন ডেস্ক
তিনবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী সাদিকা পারভিন পপি। নিজেকে যেন নতুন করে সাজিয়েছেন। ইদানীং নিজের ওজন কমিয়ে আগের চেয়ে আকর্ষণীয় হয়েছেন। ভিন্ন লুকে নতুন বছরে নতুন ছবি নিয়ে ক্যামেরার সামনে আসছেন। সে ছবির প্রসঙ্গ ছাড়াও চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থাসহ নানা বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা ভালো না। এটা আমরা জানি।
এজন্য সরকারিভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। আর আমার মনে হয়, পরিচালক সমিতির নতুন মুখের শিল্পী না খুঁজে মেধাবী নতুন স্ক্রিপ্ট রাইটার, নতুন পরিচালক এবং দক্ষ টেকনিশিয়ান খোঁজা উচিত। এ ছাড়া কাজের ক্ষেত্রগুলো বাড়াতে হবে। কারণ, নতুন অনেক শিল্পী দু-একটা কাজ করে হারিয়ে যাচ্ছেন।
তার মানে নতুন মুখের শিল্পীর দরকার নেই বলে মনে করছেন কি আপনি? এর জবাবে পপি বলেন, যথেষ্ট নতুন মুখ এসেছে চলচ্চিত্রে। আর যারা এসেছেন তাদের মধ্যে অনেকের ব্যক্তিগত বাড়ি-গাড়ি হয়েছে ঠিকই কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির কোনো উন্নতি হয়নি। আর আমার মনে হয়, এখানে এখনো যথেষ্ট ভালো শিল্পী রয়েছেন।
মুম্বইয়ের চলচ্চিত্রের দিকে তাকালে দেখা যায়, তাদের মধ্যে যারা সত্যিকারের শিল্পী তারা ঠিকই তারকাখ্যাতি ধরে রেখেছেন। নতুন শিল্পী এলেও তাদের জায়গা কেউই নিতে পারেনি। নতুন শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই দু-একটা ছবি হিট দেয়ার পর ঠিকমতো সেটে আসেন না বা পরিচালকের ফোন ধরেন না বলেও অভিযোগ
পাওয়া যায়। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? পপি বলেন, এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু একজন প্রফেশনাল শিল্পী এটা কখনোই করেন না। আমিও কখনোই এটা করিনি। এদিকে চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য ভালো মেকার, কাহিনি লেখক ও প্রোডাকশন হাউজ আসার পাশাপাশি সিনেমা হল সংস্কার করা খুব জরুরি বলে মনে করেন পপি। এ অভিনেত্রীকে সর্বশেষ দর্শকরা সিনেমার পর্দায় ‘সোনাবন্ধু’ ছবিতে দেখেছেন।
এ ছবিটি পরিচালনা করেন জাহাঙ্গীর আলম সুমন। এবার নতুন বছরে নতুন ছবি নিয়ে ক্যামেরার সামনে হাজির হবেন এ অভিনেত্রী। এ ছবিটি নিয়ে তিনি বলেন, আমি সবসময়ই নারীপ্রধান গল্পে কাজ করতে পছন্দ করি। আমার নতুন এ ছবির নাম ‘টার্ন’। দ্বৈত চরিত্রে কাজ করার কথা রয়েছে এতে।
যেখানে একই সঙ্গে প্রতিবন্ধী ও বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন এক তরুণীর চরিত্রে আমাকে দেখা যাবে। এর আগে এমন কোনো গল্পে আমার অভিনয় করা হয়নি। ছবিটি পরিচালনা করবেন শহীদুল ইসলাম খান। ছবির কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন নির্মাতা নিজে।
শুটিং না থাকলে কীভাবে সময় কাটান- জানতে চাইলে এ অভিনেত্রী বলেন, অবসরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গ দিয়ে ও বাসায় সিনেমা দেখে সময় কাটে। সিনেমা দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। এ সময়ের যারা অভিনেতা-অভিনেত্রী তাদের কাজ আপনার কেমন লাগে? এমন প্রশ্নের জবাবে পপি বলেন, অনেকের কাজই ভালো লাগে। আর আমি বলব যে, এদের মধ্যে অনেকে বেশ লাকি। কারণ, গ্রুমিংয়ের পাশাপাশি ভালো প্রোডাকশন হাউজের কাজে সুযোগ পেয়েছে তারা। তাদের প্রমোটও করা হচ্ছে। ভালো করছে, এটাই বড় কথা। সবার জন্য শুভ কামনা থাকবে। অনেক হিরোর সঙ্গেই সহশিল্পী হয়ে লম্বা সময় কাজ করেছেন পপি। তাই তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কার কথা আজও মাঝে মাঝে মনে পড়ে। এ প্রশ্নটা শুনে অনেকক্ষণ চুপ থেকে পপি বলেন, সবাই আমার পছন্দের। তবে এদের মধ্যে জসিম ভাইকে অনেক মিস করি। তিনি আমাকে খুব পছন্দ করতেন। ওঁর প্রোডাকশন হাউজের ছবিতে আমি কাজ করেছি।
মান্না ভাইয়ের প্রোডাকশনেও কাজ করেছি। মান্না ভাই আমাকে তার সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবিতে নিয়েছিলেন। তিনি বেঁচে থাকলে দর্শকরা আমাদের জুটির আরো ভালো কাজ হয়তো পেতেন। মিস করি অনেককে।
দেখতে দেখতে ২০১৭ সাল শেষ হতে চললো। তাই পপির কাছে জানতে চাওয়া কেমন কাটলো বছরটা? মিষ্টি হেসে নায়িকা উত্তর দিলেন, ভালো। তবে আমার মনে হয়, এবারের চেয়ে সামনের বছরটা আমার আরো ভালো কাটবে।